নতুন ব্যবসা শুরুর প্রস্তুতি, কৌশল ও পরিকল্পনা

নতুন ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে প্রথমেই সুন্দরভাবে সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক পরিকল্পনা করে নিতে হবে যাতে সব কাজের ব্যবস্থাপনা সহজ হয়। প্রথমে সম্পূর্ণ লেখাটি পরে, তারপরে নিজেকে প্রশ্ন করুন- ব্যবসা আইডিয়া বা ব্যবসার কৌশল হিসেবে আমি কি কি করতে চাই? প্রথমেই যেসকল লাইসেন্স বা নিবন্ধন করতে হবে, তার একটি তালিকা প্রস্তুত করে নিন। এখানে আপনাকে ব্যবসায় সফল হওয়ার উপায় হিসেবে যা যা করতে হতে পারে, তার একটা ধারনা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সবই যে আপনাকে করতে হবে এমন নাও হতে পারে। তবে সাধারনভাবে যা যা করার প্রয়োজন হয় তার একটি তালিকা এবং বর্ণনা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কোন কাজটি আগে এবং কোন কাজটি পরে করবেন তা তালিকাতে পর্যায়ক্রমে দেয়া হয়েছে।

ব্যবসা পরিকল্পনা তৈরি করুন

সঠিকভাবে ব্যবসার পরিকল্পনা না করে কোন ব্যবসা শুরু করা ঠিক হবে না। ব্যবসা কোন শখ বা দানশালা নয়, ব্যবসায় প্রথম এবং শেষ কথা মুনাফা। এমনভাবে নতুন ব্যবসা পরিকল্পনা করুন যাতে আপনি মুনাফা অর্জন করতে পারেন। নিজেকে ক্রেতা হিসেবে চিন্তা করুন, তারপরে নিজেকে প্রশ্ন করুন, আপনি কি এই সেবা বা পণ্যটি কিনবেন? ক্রেতা আপনার পণ্য বা সেবাটির কেমন মূল্য দিবেন বা আপনার পণ্য বা সেবাটির পেছনে আপনার ব্যয় কত হবে, তার উপর নির্ভর করবে এই পণ্য বা সেবাটি থেকে আপনার মুনাফা। আর্থিক ধারণা সঠিকভাবে করতে পারলে এটা আপনার ব্যবসা সম্পর্কে আপনাকে একটি সুন্দর ধারনা পেতে সাহায্য করবে। ব্যবসায় পরিবারের সহযোগিতা অনেক মূল্যবান। সেটা নানানভাবে হতে পারে, যেমন- শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে অথবা আর্থিকভাবে। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবের সহযোগিতা থাকলে স্টার্ট-আপ অনেক সহজ হয়।

ব্যবসা শুরুর আগে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেমন- ব্যবসায়ের মূলধন কি পরিমানে লাগবে? নতুন ব্যবসা শুরুর প্রথম এক বা দুই বছর আপনার ব্যক্তিগত খরচ কোথা থেকে আসবে? যদি এমন ভাবেন যে প্রথমে ব্যবসা শুরু করবেন এবং পরে চিন্তা করবেন মূলধন এর বিষয়ে, অর্থাৎ টাকা পয়সা কোথা থেকে আসবে, তবে অনেক ক্ষেত্রেই বাঁধার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই আর্থিক বিষয়ে সঠিক পরিকল্পনা থাকাটা অত্যন্ত জরুরী।

ব্যবসায়ের নাম নির্বাচন

ব্যবসায়ের সর্বপ্রথম ধাপই হচ্ছে নাম নির্বাচন। নাম নির্বাচন করার আগে বেশকিছু বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে, যেমন- আপনার পণ্য বা সেবা, ব্যবসায়ের ধরন, গ্রাহক ইত্যাদি। আবার, অনলাইন বা ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যবসার নামে ডোমেইন নাম পাওয়া যাবে কিনা, সেটাও বিবেচনা করতে হয়। জয়েন্ট স্টক রেজিস্টারের ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিতে পারেন আপনার পছন্দকৃত নামটি অন্য কোন কোম্পানির সাথে মিলে যায় কিনা অর্থাৎ অন্য কেও নামটি ব্যবহার করছেন কিনা। কখনোই অন্যের নাম নকল করে নামকরণ করবেন না। যদি জয়েন্ট স্টক এ নিবন্ধন করে নিতে চান, তাহলে নাম পছন্দ করে নেম-ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিয়ে রাখতে পারেন।

ব্যবসায়ের জন্য ডোমেইন নাম নিবন্ধন এবং ওয়েবসাইট

সব ধরনের ব্যবসায়ের জন্য ডোমেইন নাম এবং ওয়েবসাইট জরুরী নয়। তবে যারা ই-কমার্স বা অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা করতে চান, তাদের জন্য ডোমেইন নাম নিবন্ধন এবং ওয়েবসাইট অবশ্যই করতে হবে। একইভাবে, শুধুমাত্র ই-কমার্স বা অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা ব্যতীত অন্য ব্যবসায়ের জন্য ডোমেইন নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে খুব বেশি সতর্ক হওয়ারও প্রয়োজন নেই, তবে নামটি ব্যবসায়ের সাথে যতটা সম্পর্কিত হয় ততই ভাল। অপরদিকে, ই-কমার্স বা অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসার ক্ষেত্রে নামটি অবশ্যই ব্যবসায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে হবে, অবশ্যই ডট কম ডোমেইন হতে হবে, কোনভাবেই ফ্রী ডোমেইন নেয়া যাবে না, কারন তাতে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে ক্রেতার মনে সন্দেহ সৃষ্টি হতে পারে এবং ক্রেতার আস্থা নষ্ট হতে পারে।

ডোমেইন নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে বা কিভাবে একটি ভাল ডোমেইন নাম নির্বাচন করা যায়, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

ওয়েবসাইট তৈরিতে ই কমার্স বা অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা ব্যতীত অন্য ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে (যদি ওয়েবসাইট খুব জরুরী না হয় বা বাজেট কম থাকে) ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করাই ভাল হবে। অপরদিকে ই কমার্স বা অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসার ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট যেহেতু ব্যবসায়ের প্রধান মাধ্যম, তাই একজন ভাল ওয়েব ডেভেলপারের সহায়তা নিয়ে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ভাল একটি ওয়েবসাইট প্রস্তুত করে নিতে পারেন। অবশ্যই ওয়েবসাইট এর কনটেন্ট এর জন্য ভাল কনটেন্ট রাইটার এবং এসইও এর জন্য একজন এসইও (Search Engine Optimization) এক্সপার্টের পরামর্শ নিতে পারেন, যা আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চইঞ্জিন-এ (যেমন- Google, Yahoo, Bing) ভাল অবস্থান পেতে সহায়তা করবে। এবং, এর ফলে আপনি দীর্ঘমেয়াদে অনেক টাকা সাশ্রয় করতে পারবেন।

অফিস বা দোকান

ব্যবসার জন্য একটি দোকান বা অফিসের জায়গা খুবই প্রয়োজনীয়, কারন যেকোনো ধরনের লাইসেন্সের জন্যই অফিসের ঠিকানা প্রয়োজন হয়। তাই আপনার প্রয়োজন অনুসারে একটি অফিস বা দোকান ভাড়া করুন। তবে যদি আপনি একান্তই অফিস বা দোকানের অতিরিক্ত খরচ কমাতে চান, সেক্ষেত্রে, একসাথে কয়েকজন মিলে একটা অফিস শেয়ার করতে পারেন, অথবা কো-ওয়ার্কিং স্পেসও একটি ভাল বিকল্প হতে পারে। তবে ব্যবসার শুরুতেই যদি প্রয়োজন মনে না করেন, তবে অফিস বা দোকান নাও নিতে পারেন, এতে প্রতি মাসেই আপনার অতিরিক্ত একটা খরচ বেচে যাবে।

জয়েন্ট স্টক নিবন্ধন

একমালিকানা ব্যবসার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স করেই ব্যবসা পরিচালনা করা যায়, কিন্তু পার্টনারশিপ ফার্ম ও কোম্পানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা বিবেচনা করে জয়েন্ট স্টক এ নিবন্ধন করতে হয়। যদিও, পার্টনারশিপ ফার্মের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র চুক্তিপত্রের মাধ্যমেই ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুসারে কোম্পানি বা পার্টনারশিপ ফার্ম গঠন করতে হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে অভিজ্ঞ কোন আইনজীবীর পরামর্শ নিতে পারেন। জয়েন্ট স্টক এ নিবন্ধনের কয়েকটি ধাপ আছে। প্রথমেই ব্যবসায়ের নাম নির্বাচন করে অনলাইনে নেম-ক্লিয়ারেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে। নেম-ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার পরে ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ চূড়ান্ত নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। নিবন্ধন হয়ে গেলে নিবন্ধক কতৃপক্ষ আপনাকে একটি ডিজিটাল সার্টিফিকেট প্রদান করবেন।

জয়েন্ট স্টক নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

টিন সার্টিফিকেট

ব্যবসা পরিচালনার জন্য সাধারনত নিজ নামের পাশাপাশি কোম্পানি বা পার্টনারশিপ ফার্ম এর নামেও টিন সার্টিফিকেট নিবন্ধন করতে হয়। কোন ব্যবসায়ী সংঠনের সদস্য হতে, ব্যাংক ঋণ পেতে কিংবা লাইসেন্স এর জন্য, এরকম অনেক ক্ষেত্রেই টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। আবার নিজের বা ব্যবসায়ের ট্যাক্স রিটার্ন দিতেও টিন নাম্বার প্রয়োজন হবে।

অনলাইন এ সহজেই নিজের টিন সার্টিফিকেট নিবন্ধন নিজেই করতে পারবেন। অনলাইন এ টিন নিবন্ধনের প্রক্রিয়া জানতে এখানে ক্লিক করুন।

ট্রেড লাইসেন্স

সাধারনত সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। ব্যবসায়ের স্থান সিটি কর্পোরেশন এলাকায় হলে, সিটি কর্পোরেশন গেজেট অনুসারে ২৯৪ টি নির্ধারিত ক্যাটাগরি থেকে আপনার পছন্দমতো ক্যাটাগরিতে আপনি ট্রেড লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। লাইসেন্স ফি ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হবে। লাইসেন্সের নির্ধারিত ফি, লাইসেন্স বই’এর মূল্য, ১৫% ভ্যাট এবং সাইনবোর্ড চার্জসহ মোট ফি নির্ধারিত হবে। সাধারনভাবে, ট্রেড লাইসেন্স পেতে ২/৩ দিন সময় লাগে, তবে তদন্তের প্রয়োজন হলে অনেক সময় ৫/৭ দিন লেগে যেতে পারে।

ব্যবসায়ের ধরন ও প্রয়োজন অনুসারে অন্যান্য লাইসেন্স

ব্যবসায়ের ধরন অনুযায়ী আরও কিছু লাইসেন্স প্রয়োজন হতে পারে, যেমন- আমদানি (Import Registration Certificate) বা রপ্তানি সনদ (Export Registration Certificate), পরিবেশ সনদ (Environmental Clearance Certificate), বিস্ফোরক সনদ (Explosives Licenses), আগ্নি সনদ (Fire License) ইত্যাদি। এছাড়াও ফ্যাক্টরির জন্য আরও কিছু লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়। আপনার ব্যবসায়ের জন্য কি কি লাইসেন্স লাগবে তা জেনে প্রয়োজনীয় লাইসেন্স সংগ্রহ করুন।

ট্রেডমার্ক বা পেটেন্ট

আপনার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ের নাম, পণ্যের নাম, স্লোগান বা লোগো যাতে কেও নকল করতে না পারে বা আপনার ব্যবসায়িক সুনাম নষ্ট করতে না পারে, সেজন্য নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ হিসেবে আপনার ব্যবসায়ের নাম, পণ্যের নাম, লোগো বা স্লোগানের মধ্যে যেকোনো একটি বা সবগুলোর জন্য ট্রেডমার্ক বা প্যাটেন্ট করে রাখতে পারেন। বাংলাদেশের প্রচলিত নিয়ম অনুসারে ট্রেডমার্ক বা পেটেন্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

ব্যবসায়িক ব্যাংক হিসাব

ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট আর ব্যবসার অ্যাকাউন্ট পৃথক থাকাই ভাল। অনেক সময় ব্যবসায়ের নামে লেনদেনের প্রয়োজন হতে পারে, আবার কোন ক্রেতা যদি আপনাকে ব্যবসায়ের নামে চেক দিতে আগ্রহী হয়, সেক্ষেত্রে ব্যবসায়িক ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রয়োজন হতে পারে। তাছারা, ব্যবসায় স্বচ্ছতা রাখতেও ব্যবসার জন্য আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা উচিত।

ট্রেড অর্গানাইজেশন মেম্বারশিপ

বাংলাদেশে অনেক ট্রেড অর্গানাইজেশন রয়েছে, যেমন- এফবিসিসিআই (FBCCI), বিজিএমইএ (BGMEA), বেসিস (BASIS), ই-ক্যাব (e-CAB) ইত্যাদি। অনেক সময় কোন ব্যবসায়িক চুক্তি করতে বা ব্যাংক ঋণের প্রয়োজন হলে, কোন ট্রেড অর্গানাইজেশনের সদস্য হতে হয়। এক্ষেত্রে আপনি আপনার ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত কোন ট্রেড অর্গানাইজেশনের সদস্য হতে পারেন। এর ফলে আপনি ব্যবসায়ে সুবিধার পাশাপাশি একই ধরনের ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবেন।

সর্বশেষ প্রস্তুতি

বিজনেস কার্ড

মানুষকে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে জানানোর জন্য অর্থাৎ, আপনি যে একটা ব্যবসা আরম্ভ করেছেন তা পরিচিত এবং অপরিচিত সবাইকে জানাতে বিজনেস কার্ড সাহায্যকারী ভূমিকা পালন করতে পারে। এতে আপনার পেশাদারিত্বও বাড়বে। তাই ভাল প্রিন্টিং হাউস থেকে সুন্দর ডিজাইনে বিজনেস কার্ড প্রস্তুত করুন।

ব্র্যান্ডিং

ব্রান্ডিং এর কৌশল হিসেবে আপনার ব্যবসার প্রয়োজন অনুযায়ী মেমো, খাম, শপিং ব্যাগ, ইত্যাদি বানাতে পারেন। এগুলো আপনার ব্যবসায়ের ব্রান্ডিং এ সহায়তা করবে, পাশাপাশি আপনার ব্যবসা সম্পর্কে মানুষের আস্থা এবং আগ্রহ বৃদ্ধি করবে।

শুরু করে দিন

ব্যবসায়ের আসল উদ্দেশ্য যেহেতু মুনাফা করা, তাই যখন থেকেই মুনাফা আসতে থাকবে, আপনার আত্মবিশ্বাসও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে। যদি ব্যবসা শুরু করার সুযোগ থাকে, তাহলে সব লাইসেন্স বা প্রস্ততি শেষ করার চিন্তা না করেই অর্থাৎ প্রস্তুতির পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। এতে আগেই মুনাফা আসতে থাকবে, এবং আপনার উৎসাহও বেড়ে যাবে। ব্যবসার প্রস্তুতির পাশাপাশি আপনি আপনার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং পরিচিত সবার কাছে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে জানাতে পারেন। তাদের মধ্যে সবাই হয়তো আপনার ক্রেতা হবে না, কিন্তু তাদের রেফারেন্সে কেউ না কেউ অবশ্যই আপনার ক্রেতা হবে। শুরু থেকেই এই রেফারেন্স আপনার ব্যবসার স্টার্ট-আপে ভাল ভূমিকা রাখতে পারে।

দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন

অংশীদারি বা কোম্পানি’র ক্ষেত্রে সকল অংশীদার একসাথে বসে যার যার কাজ বণ্টন করে নিন, প্রয়োজনে তা লিখিতভাবে করুন। কারন, অংশীদারদের কর্মদক্ষতা বা আগ্রহের উপরই ব্যবসার সফলতা নির্ভর করে। অফিস সময়, কর্মচারী থাকলে তাদের কাজ বণ্টন, অফিসের নিয়ম কানুন সবকিছু নিয়মের মধ্যে রাখুন। হিসাব নিকাশের ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনে হিসাবরক্ষণ সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন। পণ্যের বাজার, মান ইত্যাদি সম্পর্কে ক্রেতার মতামত নিন এবং সে-অনুযায়ী বিক্রি ও বাজারজাতকরনে ব্যবস্থা গ্রহন করুন।

প্রয়োজনে পরামর্শকের সহায়তা নিন

আপনার ব্যবসার ধরন অনুযায়ী আইনগত বা ব্যবসা সংক্রান্ত যেকোনো প্রয়োজনে পেশাদার কোন পরামর্শকের সহায়তা নিতে পারেন। এক্ষেত্রে, একই ধরনের কোন সফল ব্যবসায়ী বা আপনার ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কারও সহায়তা নিতে পারেন। আবার আইনগত বিষয়ে ভাল কোন আইনজীবীর পরামর্শ নিতে পারেন।

লাইসেন্স বা নিবন্ধন পর্যায়ক্রমে..

  • ব্যবসায়ের নাম নির্বাচন করুন।
  • যদি আপনি জয়েন্ট স্টক নিবন্ধন করতে না চান, তাহলে ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে। অপরদিকে যদি জয়েন্ট স্টক নিবন্ধন করতে চান, তাহলে ট্রেড লাইসেন্স করার আগে জয়েন্ট স্টক এ নিবন্ধন করতে হবে। কারন, আপনি যদি প্রথমে ট্রেড লাইসেন্স করেন এবং পরবর্তীতে যদি ট্রেড লাইসেন্স যে নামে করেছেন, ওই নামে জয়েন্ট স্টক এ নিবন্ধন করতে না পারেন, তাহলে ট্রেড লাইসেন্স এ আবার সংশোধন করতে হতে পারে বা আগের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করে আবার নতুন করে করতে হতে পারে।
  • টিন সার্টিফিকেট নিবন্ধন করুন।
  • সিটি কর্পোরেশন বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স করুন।
  • প্রয়োজন মনে করলে ব্যবসা বা পণ্যের নাম, লোগো বা স্লোগান ইত্যাদির ট্রেডমার্ক বা প্যাটেন্ট করে নিতে পারেন।
  • ব্যবসায়ের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করুন।

সোশ্যাল মিডিয়া

বাংলাদেশে সোশ্যাল সাইটগুলোর মধ্যে ফেসবুক (Facebook) সবচেয়ে জনপ্রিয়। আপনার পণ্য বা সেবা বাজারজাতকরণের জন্য ফেসবুক বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলো অনেক সাহায্যকারী হতে পারে। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির এ আশীর্বাদকে অবশ্যই সঠিকভাবে কাজে লাগানো উচিত।

ধন্যবাদ

প্রকৃতপক্ষে নির্দিষ্ট করে কোন ব্যবসা করার নিয়ম, ব্যবসা করার কৌশল, ব্যবসা আইডিয়া বা ব্যবসায় সফল হওয়ার উপায় নেই। লেখাটিতে কোন ভুলভ্রান্তি ধরা পড়লে অথবা আপনার যদি এ সংক্রান্ত কোন পরামর্শ থাকে, অনুগ্রহ করে আমাদের ইমেইল অথবা ফোনে জানাতে পারেন, ধন্যবাদ।

Leave a Comment