Darun Darun Premer Golpo | ভালোবাসার গল্প

Darun darun premer golpo – read most interested Premer golpo with Bengali font, if you want to read more Bangla Love story or Premer Golpo, please see this article.

মোবাইলটা বেজেই চলেছে। একবার দুইবার তিনবার… ।
অপরিচিত কোন নম্বর থেকে ফোন এলে নিশীতা ধরেনা ।
বছর তিনেক হলো অপরিচিত নম্বরের কল রিসিভ করা বন্ধ করে দিয়েছে ।
হাতেগোনা গুটিকয়েক জানাশুনা মানুষের সঙ্গে দরকারি কথা ছাড়া অন্যকোন লোকের সাথে ফোনে কথা
বলতে চায়না নিশীতা । যথাসম্ভব এড়িয়ে চলে । স্বপ্নে বিভোর সেই এলোমেলো দিনগুলো
এখন আর নেই নিশীতার। সেসব তিন বছর আগের কথা । অতীত ।

নিশীতা এখন অনেক কিছুই বোঝে । অনেক শিখেছে । অনেক কিছুই দেখেছে । সমাজ- সংসার, আবেগ, প্রেম-ভালোবাসা,পুরুষ মানুষ সবকিছুই । এখন আর কাউকেই বিশ্বাস করতে পারেনা । এমন কি মাঝে মধ্যে নিজেকেও না !এজন্য নিজেকে সবসময় বড্ড বেশী সাবধানে রাখতে চায় । নতুন কোন ভুলের দরজায় আর পা দিতে চায় না সে ।

ফোনটা এখনও বাজছে । আননোন নম্বর । এভাবেই একদিন পরিচয় হয়েছিলো রাজিবের সঙ্গে ।
কোটিপতি বাবার পুত্র ! তারপরের একবছর স্বপ্নের মতো কেটেছে নিশীতার । বান্ধবীরা ওকে খুব হিংসা করতো ।
রাজিব প্রায় প্রতিদিনই প্রাইভেটকার নিয়ে নিশীতার হলের সামনে আসতো । নিশীতা যখন নামী-
দামী ড্রেস ও কসমেটিকস পরে বান্ধবীদের সামনে দিয়ে বাজিবের হাত ধরে প্রাইভেট কারে চড়তো, তখন বান্ধবীদের
আঁড়চোখে তাকিয়ে থাকা দেখে নিজেকে রাজপরিবারের একজন বলে ভাবতো ।

পাড়াশুনা চরমভাবে ব্যহত হচ্ছিল নিশীতার । দুটি সেমিস্টারের গ্রেড পয়েন্টও ফল্ট করলো ।
ফারুক মাঝে মধ্যে নিশীতাকে বোঝানোর চেষ্টা করতো । ফারুক ছিলো নিশীতার দূর- সম্পর্কের চাচাতো ভাই ।
ছোটবেলা থেকেই নিশীতাকে চেনে ।
রাজিবের সাথে নিশীতার সম্পর্কের ব্যাপারটা ফারুক না জানলেও সেমিস্টারের গ্রেড পয়েন্ট ফল্ট করার খবর
শুনে বুঝতে পেরেছিলো ভেতরে ভতরে কিছু একটা হচ্ছে । আরো নিশ্চিত হলো, যখন নিশীতার খারাপ রেজাল্টের
ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে তাকে চরম ভাবে অপমানিত হতে হলো ।

অল্প সময়ের মধ্যে রাজিব ও নিশীতা খুব দ্রুত প্রিয়জন থেকে আপনজন হতে থাকলো ।
আজ চায়নিজ রেস্টূরেন্ট তো কাল নন্দন পার্ক, আবার পরশু হয়ত বোটানিক্যাল ! শারীরিক ম্পর্শের আনন্দগুলো
ওদের কাছে একেবারে সাধারণ ব্যপারহয়ে যেতে থাললো । এসব ক্ষেত্রে নিশীতা কিছুই বলতোনা ।
হয়তো প্রাচুর্যের হাতছানির কারনে “না” বলতে পারতোনা । বরং তার নিজেরও শরীরের এই অচেনা অনুভুতিগুলোকে
উপভোগ করতে ভালো লাগতো ।

এভাবে যৌবনের চাহিদাগুলো ইলাস্টিকের মতো বাড়তে বাড়তে একদিন যখন রাজিব একেবারে পাগলা ঘোড়ার
মতো আচরন
শুরু করলো, নিশীতা সেদিন নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি । এরপর নিশীতা যখন বিয়ের কথা ভাবার জন্য
রাজিবকে বললো, রাজিব বিনা প্রতিবাদে তা মেনে নিয়ে বললো, ‘বিয়ে নিয়ে টেনশন করার দরকার নেই ।
আব্বা- আম্মাকে সব বলেছি । এক বছরের মধ্যেই আমরা বিয়ে করবো ।’

তারপর ! না, তারপরের ঘটনাগুলো নিশীতা আর মনে করতে চায়না । ভুলে যেতে চায় ।
কিন্তু মানুষ চাইলেই কি সবকিছু ভুলে যেতে পারে ? নিশীতাও কি ভুলে যেতে পারবে,
কিভাবে ফারুক ভাই সেদিন তাকে অন্ধকার মৃত্যুর দরজা থেকে আবার আলোতে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলো !
ফারুক ভাইয়ের কথা মনে হতেই শ্রদ্ধায় মাথাটা নুয়ে আসতে চায় নিশীতার ।
সব সময়ই অবহেলা করেছে তাকে, অপমানও করেছে ।অথচ জীবনের সংকটময়
মুহূর্তে একমাত্র সেই এগিয়ে এসেছিলো । কোন কৈফিয়াত চায়নি ।

নিশীতা যখন স্বপ্নের জগতে উড়ে বেড়াচ্ছিলো তখনই হটাৎ একদিন বুঝতে পারলো তার শরীরের অভ্যন্তরে নতুন
একটা অস্তিত্বের জন্ম হয়ে গেছে । দিশেহারা হয়ে পড়লো নিশীতা । ইতিমধ্যে খবরটা সমস্ত ভার্সিটিতেও
ছড়িয়ে পড়লো । বান্ধবীরাও তাকে প্রচন্ড ঘৃনা করতে শুরু করলো । কেউ তার পাশে দাঁড়ালোনা । বরং সবাই
তাকে কুৎসিতভাবে ইংগিত করতে থাকলো ।
রাজিবকে তার প্রেগনেন্সির কথা জানিয়ে নিশীতা যখন দ্রুত বিয়ের ব্যবস্থা করতে বললো, রাজিব কোন উত্তর
না দিয়ে শুধু বললো, ‘ভেবে দেখি কি করা যায় ।’

এরপর থেকেই রাজিব সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দিল । নিশীতা রাজিবের বাসায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারলো,
ফ্যামিলি থেকে অনেক আগেই তার বিয়ে ঠিক করে রেখেছে । মানুষের সামনে মুখ দেখানোর মতো সব পথ
বন্ধ হয়ে গেল নিশীতার । সে তখন আত্নহত্যার কথা চিন্তা করতে লাগলো । ফারুকের কানে যখন ঘটনাটা
পৌচ্ছালো তখন এক মুহূর্ত দেরি না করে সে নিশীতার পাশে এসে দাঁড়াল । নিশীতা বলতে সংকোচবোধ করলেও
ফারুক জোরপূর্বক বিস্তারিত সব ঘটনা শুনলো । দ্রুত ওর অ্যাবরশনের ব্যবস্থা করলো এবং
পরবর্তী এক মাস ছায়ার মতো সর্বক্ষণ ওর সঙ্গে থাকলো ।

হাজারটা কথা বলে বুঝিয়ে বিভিন্ন প্রকার সাহায্য করে ওকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করলো ।
এক সময় নিশীতা যখন অনেকটা স্বাভাবিক হলো, ফারুক ধীরে ধীরে আবার নিশীতার কাছ থেকে আড়ালে চলে গেল ।
তারপর থেকে, একবার অন্তত ক্ষমা চাওয়ার জন্যে নিশীতা ফারুককে অনেক খুঁজেছে, কিন্তু পায়নি ।

Darun Premer Golpo 2

টুপুর কে তোমরা চিনবে না। তোমরা অবশ্য আমাকেও চিনো না। দোষটা তোমাদের নয় । আমি এমন কোন
জগৎ বিখ্যাত লোক নই যাকে না চিনলে লোকে মামলা ঠুকে দিবে।

আমি হচ্ছি টুপুর এর ছেলেবন্ধু। এই কথাটা বলার সময় আমার চোখে একটা ছেলেমানুষী ধরনের
বিশ্ব্জয়ের হাসি খেলে যায়।টুপুর বাড়াবাড়ি ধরনের সুন্দর একটা মেয়ে।খুব কমন কথা মনে হচ্ছে ।
হতে পারে, আমি তো আর আনকমন কেউ নই।সে যাক!! আমার চোখে বাড়াবাড়ি সুন্দর একটা
মেয়ের ভালোলাগার মানুষ আমি।এই অনুভূতি একটা বিশেষ কিছু।বিশেষ কিছু টা ঠিক
কিসের মত এটা বুঝাতে পারবো না।

ফার্মগেটের ফুটপাতের উপর প্রচন্ড ভীড়ে হাঁটার সময় টুপুর যখন অনেক নির্ভরতার সাথে
আমার হাত ধরে চলে তখন আমার অনেক দিন বাঁচতে ইচ্ছা করে।
অনেক দিন আমি ওর পাশে নির্ভরতা নিয়ে দাঁড়াতে চাই।
ভীড় চলে গেলেও আমি ওর হাত ছাড়তে পারিনা।জোর করে ধরে রাখি। তোমরা কেউ হয়তো তা দেখে
আমাকে অসভ্য ভাবতে পারো।কোন কারণ ছাড়াই একটা ছেলে একটা মেয়ের হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে।

অসভ্যতার আর কি বাকী রইলো। বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছা করে করিনা। আমি পারি না। আমি আরো অনেক কিছু পারি না।আমি টুপুর কে বুঝতে পারি না। পরিচয়ের সেই প্রথম দিন থেকেই।
তারিখ, বার কিছুই মনে নেই। দিনটা আর দশটা দিনের মত ছিল। আমি ঢাকার এক ব্যাস্ত রাস্তায় কি জানি হয়তো বসুন্ধরা সিটির দিকে যাচ্ছিলাম। রাস্তা পার হবো ,দেখি অদ্ভুত সুন্দর একটা মেয়ে ভয়ে রাস্তা পার হতে পারছে না।

এমন সময় যা হয় আর কি। নিজের মধ্যে কেমন যেন বীরপুরুষ ভাব চলে আসে।
খুব বীরপুরূষের মত রাস্তা পার হতে গেলাম। মেয়েটা আমার পিছু পিছু চলল।আমি বোধ হয় ঘোরের মধ্যে ছিলাম।
একটা মাইক্রো র সাথে লেগে গেলো আমার।খুব ব্যাথা পেয়েছিলাম বলে মনে হয় না। মাথা ফেটে রক্ত পড়ছিল।
অদ্ভুত সুন্দরী মেয়েরা ভয় পেলে আরো সুন্দর লাগে।মেয়েটিকে অনেক সুন্দর লাগছিল তখন।কি ভাবছেন?

তখন থেকেই আমাদের গল্প শুরু।ভুল ভাবছেন গোলমাল শুরু হতেই সুন্দরী ফুরুৎ।ভুলেই যেতাম ওর কথা।
কিন্তু ওই দিন ই আবার দেখা হয়ে গেলো।একটু হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। মাথায় একটা ব্যান্ডেজ নিয়ে বাসায় ফিরেছি।
বিকাল হয়ে গেছে তখন। বাসায় এসে ওই মেয়েটিকেই দেখলাম!! মেঘ না চাইতেই জল।আমার বোন টাকে গত
দুইমাস ধরে এই মেয়েটাই নাকি পড়ায়।আমার সাথে কখনো দেখা হয় নি আগে।

Read Also: Bangla Love Story

আমার কখনও দেখার আগ্রহও হয় নাই। আসলে ব্যান্ডেজ মাথায় বাস্য আস্তেই মা এমন চিৎকার
শুরু করলেন যে সবাই চলে এলো।তখন ই দেখলাম টুপুর কে। তখন ই প্রেমে পড়লাম।হুমম প্রেম!!!
সেই প্রেম যে একদিন বড় প্রেমে রূপ নেবে যে প্রেম শুধু কাছেই টানে না দুরেও নাকি সরিয়ে দেয় তা জানতাম না।
জানতাম না ওর প্রেমে আমি যে পাগল হয়ে গেছি।টুপুর মেয়েটাকে নাহ!!

ওর অদ্ভুত সুন্দর শরীরটাকে বেশি ভালোবাসা শুরু করেছি।ওকে নির্ভরতা দিতে গিয়ে আমার নিজের ভিতরের জন্তুটা কে নির্ভরতা দিতে শুরু করেছি। ওই দিনটা আমার স্পষ্ট মনে আছে,মঙ্গলবার।আমার মোবাইল ফোন টা চুরি হলো।
প্রচন্ড ভীড়ে বাস থেকে কে যেনো নিয়ে গেছে। শনিবার রাতে টুপুর চলে গেল।যাওয়ার আগে আমাকে একটা
টেক্সট করেছিল আমার নতুন মোবাইলে।

“আমার sweet cutie pie, আমার যাদুসোনা, জানো আমি না তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
তোমার জানালা দিয়ে যে আকাশ টা দেখা যায় ওই আকাশ টা এখন কালো।
কাল সকালে দেখবে আবার নীল হবে।ঠিক আমার মতো, আমি তো তোমার বিষে নীল হয়েছি সোনা।
এই নীল শরীর টা তোমার জন্য ছিল, তুমি তা পৃথিবী কে দিয়ে দিয়েছো, এই সবুজ মন টা আর কাউকে দিতে দেব না।

তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি ,অনেক ,অনেক অনেক। ভালো থেকো।”
মোবাইল ফোন টাতে আমার টুপুর ছিল। আমার টুপুরের শরীর ছিল।তা এখন অন্তর্জালের নানান খুপরিতে ঘুরছে।
আর আমার টুপুর ঘুমিয়ে পড়েছে। আমার ডাকে ও এখন আর উঠে না জানো।
ওর সবুজ মন টা আমি না নীল করে দিয়েছি।

নীলে নীলে কালো হয়ে গেছে। অনেক কালো। তোমরা তোমাদের জান্তব পশুটা কে নাড়াও
আমার টুপুর কে দেখে।আমার বাড়াবাড়ি সুন্দর টুপুরকে দেখে।টুপুর আমাকে অভিশাপ দিয়ে দিয়ে গেছে।
ভালোবাসার অভিশাপ।তোমাদের আদিম উল্লাস আমার যন্ত্রণা। নীল যন্ত্রণা। একটা সবুজ মন কে হত্যা র যন্ত্রণা।
টুপুর !!!! !!!  !!! তোমার মত আমি ও নীল ।
ওই আকাশের মত না , বিশ্রী যন্ত্রণার মত।

Hope you Like our article about Darun darun Premer Golpo.

Leave a Comment